ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায় ২০২৩ ব্যাংক থেকে লোন নেওয়া কি জায়েজ?

আমরা সচরাচর আমাদের আর্থিক স্বচ্ছলতা দূর করতে অনেক সময় আর্থিক ঘাটতি পূরণের জন্য বিভিন্ন ব্যাংক বা এনজিও থেকে লোন গ্রহণ করি। আমরা আজকে ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার বিষয়ে আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করবো। আমরা ঠিক তখনই ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে থাকি যখন আমরা আর্থিকভাবে কিছুটা ঘাটতি তে থাকে। সত্যি বলতে আমরা মানুষ হিসাবে সকলে আর্থিকভাবে সচ্ছল নয়। অনেক সময় অনেকে কিছু করতে গেলে অনেকে ঋণের মাধ্যমে সেটা পূরণ করার চেষ্টা করে এবং পরবর্তীতে আস্তে আস্তে সেই ঋণের বোঝা শোধ করে।

আপনি যদি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার কথা ভাবেন তাহলে আপনাকে কোন কোন উপায় ব্যাংক লোন নিতে পারবেন সেই বিষয়ে আজকে আমরা জানাবো। এর পাশাপাশি আমাদের মাঝে যারা মুসলমান ভাইরা রয়েছেন তারা ব্যাংক থেকে লোন নিলে সেটা জায়েজ হবে কিনা সে বিষয়ে কয়েকটি ধারণা রয়েছে সেই ধারণা গুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করব। যারা এই বিষয়ে জানতে আগ্রহী রয়েছেন তারা অবশ্যই আমাদের পোষ্ট মনোযোগ সহকারে পড়ে শেষ করবেন। আশা করছি পোস্ট পড়ে শেষ করলে আপনারা সবকিছু একদম পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারবেন।

ব্যাংক থেকে লোন কারা পাবে

ব্যাংক থেকে বিভিন্ন মেয়াদে বিভিন্ন ভিত্তিতে দেওয়া লোন দেওয়া হয়। ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সুবিধা বা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পেয়ে থাকেন সরকারি চাকুরিজীবি অথবা ব্যাংক কর্মকর্তা। যারা সরকারি চাকরিজীবী অথবা ব্যাংক কর্মকর্তা তাদের একটি স্থায়ী চাকরি রয়েছে যার কারণে প্রত্যেকটি ব্যাংক এ সকল কর্মচারী কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছায় ঋণ দিতে আগ্রহ পোষণ করেন। তাই যারা সরকারি চাকুরিজীবি অথবা সেই ব্যাংকের কর্মকর্তা রয়েছেন তারা নির্দ্বিধায় ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন।

এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের বড় ব্যবসায়ী বা প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারেন। তবে ব্যাংক থেকে বড় কোন লোন নিতে হলে সেই লোন এর বিপরীতে আপনাকে জামানত জমা রাখতে হবে। আমাদের দেশে যে প্রচলিত আইন রয়েছে সেই আইন অনুযায়ী জামানত হিসেবে জমির দলিল থেকে শুরু করে ব্যবসা পরিচালনার কাগজপত্র এই সকল জিনিস জমা রাখা হয়। তাই যাদের অতিরিক্ত জমি রয়েছে অথবা তাদের একটি বড় ব্যবসা রয়েছে তারা ইচ্ছা করলেই ব্যাংক হতে বিভিন্ন মেয়াদে বিভিন্ন ধরনের লোন গ্রহণ করতে পারেন।

এছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংক অথবা বাংলাদেশের বিশেষায়িত কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক গুলো কৃষকদের বিভিন্ন মেয়াদে অতি স্বল্প মূল্যে ঋণ প্রদান করছে। এই সকল ঋণ একজন কৃষক তার নিজস্ব পরিচয় অথবা কৃষকের কার্ড দেখিয়ে গ্রহণ করতে পারে। এই ক্ষেত্রে জামানতের পরিমান খুব অল্প পরিমাণ হয়ে থাকে অথবা বিনা জামানতে সরকারি ব্যাংকগুলো কৃষকদের ঋণ প্রদান করছে। ব্যাংক হতে ঋণ উপরিউক্ত তিন ধরনের ব্যক্তি খুব সহজে গ্রহণ করতে পারবেন।

ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার উপায় সমূহ

একটি ব্যাংকে বিভিন্ন ধরনের লোন প্রদান করা হয়। বিভিন্ন ধরনের বিভিন্ন ধরনের নিয়মনীতি মেনে লোন প্রদান করা হয়। তবে যেই ব্যক্তিকে লোন প্রদান করা হয় সেই ব্যক্তির অবশ্যই কিছু বৈশিষ্ট্য থাকা প্রয়োজন লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে। যেনতেন ব্যক্তিকে ব্যাংক কোন ভাবে লোন প্রদান করবে না। ব্যাংকের বিভিন্ন লোন কে কেন্দ্র করে আজকে আমরা ব্যাংকে লোন নেওয়ার উপায় গুলো আপনাদের জানাবো।

যারা সরকারি চাকুরিজীবি অথবা ব্যাংক কর্মচারী রয়েছেন তারা বাড়ির লোন অর্থাৎ গৃহ লোন গ্রহণ করতে পারেন। এই লোন নিতে হলে আপনাকে আপনার চাকরির সকল কাগজপত্র জমা দিতে হবে। শুধুমাত্র এই কাগজপত্র জমা দিয়েই এবং আপনি কিছু নমিনি সংগ্রহ করলেই ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন।

যারা বড় বড় ব্যবসায়ী রয়েছেন তারা ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারেন। তারা তাদের ব্যবসা দেখিয়ে অর্থাৎ বড় ব্যবসার কাগজ পাতি দেখিয়ে ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারেন। তবে এই জন্য অবশ্যই তার ওই ব্যাংকে একটি কারেন্ট একাউন্ট থাকতে হবে। এর পাশাপাশি একটি সেভিংস একাউন্ট থাকতে হবে। তাহলে সকল কাগজপত্র দেখিয়ে সে ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণ করতে পারে।

এছাড়াও যারা জমির কাগজ জমা রেখে জামানত হিসাবে ব্যাংক থেকে বিভিন্ন মেয়াদের লোন গ্রহণ করেন তাদের জন্য পদ্ধতি হলো ব্যাংকের নিয়মনীতি মেনে তাদের জমির দলিল জমা দানের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে লোন নেওয়া। এই সকল নামগুলো বিভিন্ন মেয়াদের হতে পারে। কৃষক রয়েছেন তারা তাদের কৃষকের কার্ড দেখিয়ে ব্যাংক থেকে বিভিন্ন মেয়াদে লোন নিতে পারেন।

ব্যাংকের লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে লোন গ্রহণকারীর বয়স সীমা

যারা ব্যাংক থেকে লোন নিতে চান তারা ব্যাংক কর্তৃক লোন নেওয়ার যোগ্য হতে হবে তারপরেই সেই ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন। এই ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই পূর্বে উল্লেখিত যোগ্যতাগুলো অর্জন করতে হবে। পূর্বে উল্লেখিত যোগ্যতা অর্জন করার পরেও আপনার যদি বয়স না হয় সেই ক্ষেত্রে ব্যাংক আপনাকে ঋণ প্রদান করবে না।

বাংলাদেশে যে কয়টি ব্যাংক রয়েছে তাদের প্রত্যেকটি ব্যাংকে সর্বনিম্ন ঋণ নেওয়ার বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে 18 বছর। তবে এই ক্ষেত্রে 20 বছর অথবা 22 বছর হলে ব্যাংক গ্রহণযোগ্যতা বেশি নেয়। আর ওপরের দিকে লক্ষ্য করলে সর্বোচ্চ 60 বছর পর্যন্ত বয়সে একজন ব্যক্তি ব্যাংক কর্তৃক ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন।

চাকুরীজীবিদের ব্যাংক থেকে লোন নিতে কত টাকা বেতন পেতে হবে

আমি ওপরের অংশে উল্লেখ করেছি ব্যাংক থেকে লোন নিতে হলে আপনাকে চাকুরীজীবি হতে হবে। এখন শুধু চাকুরীজীবি হলে হবেনা, আপনার বেতন স্কেল একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে গেলে আপনি সেই বেতন স্কেল এর পরিবর্তে ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণ করতে পারবেন। আমরা এখন সেই বিষয় নিয়ে আপনাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করব।

এই ক্ষেত্রে যারা সরকারি চাকরিজীবী রয়েছেন তাদের বেতন স্কেল 14,000 থেকে শুরু হয় এবং সর্বোচ্চ অনেক দূর পর্যন্ত যায়। তাই ধরা যেতে পারে আপনি যদি প্রতিমাসে 14,000 টাকার অধিক বেতন পান তাহলে সেখান থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণে লোন গ্রহণ করতে পারবেন। এছাড়াও যাদের বেতন 32 হাজারের উপরে হয়ে গেছে তারা ব্যাংক থেকে গৃহ লোন গ্রহণ করতে পারবেন।

ব্যাংক থেকে লোন নেওয়া কি জায়েজ?

আমরা যারা মুসলমান রয়েছে তাদের ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার বিষয়ে সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। কেননা আমাদের শরিয়া মোতাবেক ব্যাংক থেকে লোন নেওয়া এর উপর বিশেষভাবে বিধিনিষেধ রয়েছে। আপনারা যারা নিয়মিত ইসলাম ধর্ম নিয়ে পড়াশোনা করেন অথবা গবেষণা করেন তারা ইতিমধ্যে জেনেছেন যে হয়তো এখন পর্যন্ত এমন কোনো দলিল পাওয়া যায়নি যেখানে সরাসরি উল্লেখ রয়েছে লোন গ্রহণ করা যাবে।

বর্তমানে বিশ্বে যে বড় বড় ওলামা এবং ইসলামের বড় বড় নেতারা রয়েছেন তাদের ভাষ্যমতে আপনি কোন ভাবে ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণ করতে পারবেন না। ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণ না করতে পারার সব থেকে বড় কারণ হল আপনি যখন ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণ করবেন তখন ব্যাংক আপনাকে কোনোভাবেই বিনা সুদে লোন গ্রহণ করতে দেবে না।

এতে করে আমরা ব্যাংকে নির্দিষ্ট হারে সুদ প্রদান করছি। সুদ এবং ঘুষ প্রদান করা আমাদের ধর্মে একেবারেই হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। তাছাড়াও এই লোনের মাধ্যমে অনেকে অনেক ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। অনেক আলাপআলোচনা এখন পর্যন্ত চলে আসছে তারপরও কেউ এখনো বলতে পারেনি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়া জায়েজ রয়েছে।

আপনারা এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে ইউটিউব এ থাকা বিভিন্ন ধরনের বড় বড় হলাম ওলামাদের সাক্ষাৎকার দেখতে পারেন। বিশ্বের সকল প্রান্তে থাকা বড় বড় হলাম উলামারা একই মত পোষণ করবেন।

এই ছিল আজকের ব্যাংক লোন সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য। আমাদের আজকের লেখা আপনাদের কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানানোর চেষ্টা করবেন। আপনাদের যদি এই সম্পর্কিত আরো বিস্তারিত তথ্য জানার থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাবেন। আমরা পরবর্তীতে বিভিন্ন আপডেটের সঙ্গে চেষ্টা করব আপনাদের প্রশ্নের সমাধান করে দিতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *