বিকাশ একাউন্ট লক হলে করণীয় ২০২৩

প্রিয় বন্ধুরা, আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদেরকে স্বাগতম। আজকে আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করব বিকাশ একাউন্ট লক হয়ে গেলে করণীয় কি সে সম্পর্কে। আপনারা যারা বিকাশ একাউন্ট ব্যবহার করেন তাদের অনেক সময় একাউন্ট লক হয়ে যায় কিংবা ব্লক হয়ে যেতে পারে। তাই আপনারা যারা এই সমস্যায় পড়েছেন তারা আজকে আমাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট লক হয়ে গেলে করণীয় কি সে সম্পর্কে জেনে নিন।

দৈনন্দিন নানান প্রয়োজনে আমরা বিকাশ ব্যবহার করে থাকি। বিকাশের মাধ্যমে আমরা দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত যেকোনো সময় এবং যে কোন মুহূর্তে টাকা লেনদেন করতে পারি। বর্তমানে এই তথ্য প্রযুক্তির যুগে আমরা আমাদের এই মুঠোফোনের মাধ্যমে কোন প্রকার ব্যাংকিং সহায়তা ছাড়াই ঘরে বসেই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় টাকা পাঠাতে পারি এবং টাকা রিসিভ করতে পারি। এই বিকাশ অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে আমরা কোন রিচার্জ পয়েন্টে না গিয়েই আমরা যে কোন নাম্বারে টাকা রিচার্জ করতে পারি।

এছাড়াও আমরা যদি অনলাইন থেকে কোন কিছু কেনাকাটা করি তা ঘরে বসেই সেই বিল পরিশোধ করতে পারি। এছাড়াও আমরা যদি কোন শপিংমলে কোন কিছু কেনাকাটা করি তবে তার বিল আমরা এই বিকাশ অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে পরিশোধ করতে পারি। বিভিন্ন ধরনের ইউটিলিটি বিল যেমনগ্যাস বিল, পানির বিল, বিদ্যুৎ বিল সহ নানান ধরনের ইউটিলিটি বিল আমরা এই বিকাশ একাউন্ট থেকে পরিশোধ করতে পারি। আমরা যদি অনলাইন থেকে বাস, ট্রেন লঞ্চ কিংবা বিমানের টিকিট ক্রয় করতে চাই তবে তাই বিকাশ একাউন্ট দিয়ে করতে পারি।

সুতরাং বোঝা যাচ্ছে যে আমরা আমাদের এই মহামূল্যবান বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট এর মাধ্যমে কত কিছুই না করতে পারি। কিন্তু অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে গিয়ে অনেক সময় আমরা একটি বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হই তা হল, আমরা আমাদের বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট টি ভুলবশত হোক কিংবা না বুঝে হোক আমাদের এই অ্যাকাউন্টটি অনেক সময় লক হয়ে যায়। এখন কোনভাবে যদি আমাদের এই অ্যাকাউন্টটি লক হয়ে যায় তাহলে আমরা বেশ চিন্তিত হয়ে পড়ি।

প্রথমেই যে চিন্তাটা আমাদের মধ্যে আসে তা হল আমাদের অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা রয়েছে, একাউন্ট লক হয়ে গেলে এইটা কার কি হবে? আমরা চিন্তায় পড়ে যাই কিভাবে টাকা আমরা পুনরুদ্ধার করব? আবার অনেক সময় দেখা যায় আমরা কোথাও টাকা পাঠাবো কিন্তু আমাদের অ্যাকাউন্ট ব্লক হয়ে বসে আছে তাহলে আমরা এখন কিভাবে টাকা পাঠাবো? আপনাদের সুবিধার্থে আমরা বলছি যে দুশ্চিন্তা করার কোন কারণ নেই। প্রতিটি সমস্যার একটি সমাধান রয়েছে। আপনারা যদি চিন্তিত না হয় একটু কৌশলী হন তাহলে এই সমস্যা থেকে আপনারা মুক্তি পেতে পারবেন।

আপনার কি একটি বিকাশ অ্যাকাউন্ট রয়েছে? আপনার বিকাশ একাউন্টটি কোনভাবে কি লক হয়ে গিয়েছে? আপনি কি জানতে চান আপনার এই লক হওয়া বিকাশ একাউন্ট নাম্বার টি কিভাবে পুনরুদ্ধার করবেন? তাহলে বন্ধুরা আমরা বলব আপনি সঠিক জায়গাতেই আছেন এবং ঠিক জায়গাটি নির্বাচন করেছেন। কেননা আজকের এই পোস্টে আমরা আপনাদেরকে বিকাশ একাউন্ট লক হয়ে গেলে করণীয় কি সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানিয়ে দেব।

আপনারা যদি আমাদের আজকের এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে বিকাশ একাউন্ট লক হয়ে গেলে করনীয় কি সে সম্পর্কে পরিপূর্ণভাবে জানতে পারবেন। এবং যাদের অ্যাকাউন্ট এখনো চলমান রয়েছে তারাও সতর্ক হয়ে যেতে পারবেন এবং একাউন্ট লক হয়ে গেলে করণীয় কি সে সম্পর্কে জেনে নিতে পারবেন। তাই আমরা বলব আমাদের এই পোস্টটি ধৈর্য সহকারে পড়তে থাকুন এবং আমাদের সাথেই থাকুন।

বিকাশ একাউন্ট লক হয় কেন?

বিভিন্ন কারণে আপনাদের মহামূল্যবান বিকাশ একাউন্ট লক হয়ে যেতে পারে। তবে বিকাশ একাউন্ট নাম্বার ব্লক হওয়ার অন্যতম কারণ হলো ভুল পিন নাম্বার প্রদান করা। অর্থাৎ আপনারা যদি বিকাশ একাউন্ট থেকে কোন কার্যক্রম করতে যান তখন একটা সময় গিয়ে আপনাদের পিন নাম্বার জানতে চাওয়া হয়।

আপনারা যদি তখন ভুল পিন নাম্বার প্রদান করেন সেক্ষেত্রে আপনাদের একাউন্ট ব্লক হয়ে যেতে পারে। এটি তখনই হয় যখন আপনারা পরপর তিনবার ভুল বিকাশ নাম্বার প্রদান করেন। তাই আপনারা যারা বিকাশ ব্যবহার করেন পিন নাম্বারটি খুব সতর্কতার সাথে সংরক্ষণ করে রাখবেন এবং যখন পিন নাম্বার প্রদান করার সময় হবে তখন সঠিকভাবে তা প্রদান করবেন।

বিকাশ অ্যাকাউন্ট নাম্বার লক হয়ে গেলে করণীয়

আপনাদের যদি বিকাশ একাউন্টটি কোনভাবে লক হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে আপনারা প্রথমে আপনাদের নিকটস্থ কাস্টমার কেয়ার পয়েন্টে যোগাযোগ করবেন। সেখানে গিয়ে আপনারা তাদেরকে জানাবেন যে আপনার অ্যাকাউন্ট ব্লক হয়ে গিয়েছে। তখন ওই কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধি আপনার কাছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে চাইবে। আপনারা যদি সে তথ্যগুলো সঠিকভাবে তাদেরকে প্রদান করতে পারেন এবং সকল তথ্য যাচাইবাছাই করে ওই কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধি যদি মনে করে যে আপনি সঠিক ব্যক্তি তবে তারা অত্যন্ত বিনয়ের সাথে আপনার সমস্যার সমাধান করে দেবে। তবে এক্ষেত্রে কিছু জরুরী তথ্য বা ডকুমেন্ট আপনাদেরকে সেখানে সাথে করে নিয়ে যেতে হবে। যা যা লাগবে তা নিম্নে দেয়া হলঃ

  • আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র এর ফটোকপি। অথবা যে কাগজপত্র দিয়ে আপনারা আপনাদের বিকাশ অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন তার ফটোকপি। যেমনড্রাইভিং লাইসেন্স অথবা পাসপোর্ট
  • যে নাম্বার দিয়ে একাউন্ট খোলা হয়েছিল সে নাম্বার সাথে করে নিয়ে যেতে হবে।
  • যার নামে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল সেই ব্যক্তি কে সশরীরে উপস্থিত হতে হবে।
  • সব শেষ অ্যাকাউন্ট দিয়ে যা লেনদেন করেছিলেন তার সঠিক তথ্য দিতে হবে।

উপরোক্ত শর্তগুলো মেনে আপনারা যদি কাস্টমার কেয়ার পয়েন্টে যোগাযোগ করেন এবং সব তথ্য গুলো ঠিকঠাক ভাবে তাদের কে প্রদান করেন তবে তারা আপনাদের একাউন্ট আনব্লক করে দেবে এবং নতুন পিন নাম্বার সেট করে দেবে।

আপনারা যদি উপরোক্ত পদ্ধতিতে আপনাদের অ্যাকাউন্ট আনলক করতে না চান তাহলে আপনাদের জন্য বিকল্প আরো একটি পদ্ধতি রয়েছে। আর তা হল সরাসরি কাস্টমার কেয়ারে ফোন কল করে সমাধান করে নেয়া। আপনারা যদি ফোন কল করে আপনাদের লক হয়ে যাওয়া বিকাশ একাউন্টটি আনলক করতে চান তাহলে 16247 এই নাম্বারে ফোন কল করে সমাধান করে নিতে পারবেন।

প্রথমে আপনাদেরকে উপরোক্ত নাম্বারে কল করতে হবে। কল করার পর কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধির সাথে কথা বলার জন্য কয়েকটি ধাপ রয়েছে তা নির্ভুল ভাবে অনুসরণ করবেন। অর্থাৎ ফোনে আপনাদেরকে ইনস্ট্রাকশন দেয়া হবে যে কোথা থেকে কোথায় যেতে হবে। আপনারা যখন প্রতিটি ধাপ অনুসরণ করে কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধির সাথে কথা বলার অপশনে চলে আসবেন তখন বিকাশ এর একজন বিশ্বস্ত কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধি আপনাকে বিনয়ের সাথে সাধুবাদ জানাবে এবং জানতে চাইবে স্যার আপনাকে কিভাবে উপকার করতে পারি?

আপনারা যখন আপনাদের সমস্যার কথা তাদেরকে বলবেন, এখন তারা কিছু প্রশ্ন আপনাদেরকে করবে আপনারা ঠিকঠাকভাবে তার উত্তরগুলো দিতে থাকবেন। প্রশ্নগুলো এমন হতে পারে যে, আপনার নাম, যে নাম্বার দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলা হয়েছিল সে নাম্বার, যার নামে বিকাশ একাউন্ট খোলা হয়েছিল তার নাম, যে কাগজপত্র দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলা হয়েছিল তার নাম্বার (ন্যাশনাল আইডি কার্ড নাম্বার, পাসপোর্ট নাম্বার কিংবা ড্রাইভিং লাইসেন্স নাম্বার), যার নামে একাউন্ট খোলা হয়েছিল তার জন্ম তারিখ, আপনি আপনার একাউন্ট থেকে সর্বশেষ কী পরিমাণ টাকা লেনদেন করেছেন?

মূলত এ ধরনের প্রশ্ন গুলি করা হয়ে থাকে। আপনি যদি সঠিক ব্যক্তি হয়ে থাকেন তাহলে প্রতিটি তথ্য তাদেরকে নির্ভুলভাবে প্রদান করবেন। তথ্যগুলো সঠিক ভাবে প্রদান করার পর ওই কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধি যাচাইবাছাই করে দেখবে যে আপনি সঠিক ব্যক্তি কিনা। যদি সব ঠিকঠাক থাকে তাহলে তারা একটি টেম্পোরারি পাসওয়ার্ড আপনার মোবাইল ফোনে পাঠিয়ে দেবে। এবং এই পাসওয়ার্ড দিয়ে আপনি আপনার বিকাশ একাউন্টে লগইন করতে পারবেন। তবে এই পাসওয়ার্ডটি একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। একাউন্টে লগইন করার পর পরবর্তীতে অবশ্যই আপনারা আপনাদের পাসওয়ার্ড টি পরিবর্তন করে ফেলবেন। আর এভাবেই আপনারা এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

শেষ কথা

আশা করছি এই পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে এবং এখান থেকে আপনারা অনেক উপকৃত হয়েছেন। আপনারা যদি এ সম্পর্কে আরও কিছু জানতে চান তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্টে জানাবেন। এ ধরনের নতুন নতুন তথ্য জানতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। ধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *