পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক লোন সম্পর্কে জানুন ২০২৩ Palli Sanchay Bank Loan

আজকে আমরা আলোচনা করব পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক লোন সম্পর্কে। পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক তাদের আওতায় বেশ কিছু লোন প্রদান করে। আমরা সেই বিষয়ে আলোচনা করব। আপনারা অনেকেই ইতিমধ্যে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। এই ব্যাংকের নাম দেখলে বোঝা যাবে মূলত এই ব্যাংক কি ধরনের কাজ করে। এটি মূলত সরকারের একটি প্রকল্প মূলক ব্যাংক। এই ব্যাংক এর মাধ্যমে গ্রামে থাকা মানুষদের মাঝে সঞ্চয় এর মাত্রা বৃদ্ধি করার জন্য বিভিন্ন মেয়াদে লোন প্রদান করা হয়। আজকে আমরা এই বিষয়ে আলোচনা করব।

আপনাদের মধ্যে যারা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের বিভিন্ন লোন সম্পর্কে জানতে আগ্রহী রয়েছেন তারা আমাদের আজকের এই পোস্ট থেকে তা জানতে পারবেন। পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক মূলত তাদের গ্রাহকদের বিভিন্ন মেয়াদের ঋণ প্রদান করে। ঋণ গুলো কিভাবে গ্রহণ করা যায় এবং এই ঋণ গুলোর কিকি বাধ্যবাধকতা রয়েছে সবগুলো নিয়ে আজকে আমরা আলোচনা করব। আপনারা যারা আমাদের আজকের অনুচ্ছেদ পড়বেন তারা জানতে পারবেন পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক এর যাবতীয় কর্মকাণ্ড সম্বন্ধে। পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক বাবরের মতই চেষ্টা করে আসছে গ্রামীণ মানুষদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে।

বাংলাদেশ বহু ব্যাংক রয়েছে যারা গ্রামীণ পর্যায়ে কর্মকান্ড পরিচালনা করে। কিন্তু এর বাইরে তারা শহরাঞ্চলেও বিভিন্ন কর্মকান্ড পরিচালনা করে এবং বিভিন্ন অত্যাধুনিক এবং অন্যান্য সেবা প্রদান করে। কিন্তু পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের শুধুমাত্র কাজ হচ্ছে গ্রামীণ পর্যায়ে গরীব কৃষকদের অথবা বেকার মানুষদের অর্থসংস্থানের যোগানের মাধ্যমে কর্মশীল করে তোলা। এটি মূলত বাংলাদেশ সরকারের একটি উদ্যোগ এবং যার ফলে এই প্রকল্প বহুদিন ধরে বাংলাদেশে চলছে। আপনাদের মাঝে যারা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক থেকে বিভিন্ন মেয়াদে লোন গ্রহণ করেছেন বা ভাবছেন লোন গ্রহণ করবেন তারা আমাদের আজকের এই পোস্ট থেকে বিভিন্ন তথ্য পেয়ে যাবেন।

পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক লোনের প্রকারভেদ

অন্যান্য ব্যাংকের মতন পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক বিভিন্ন মেয়াদে এবং বিভিন্ন নিয়ম মেনে লোন প্রদান করে। লোনের এই ভিন্নতার কারণে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যায়। এখন আমরা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক এর বিভিন্ন ভাগ এর লোনের কথা উল্লেখ করব।

উদ্যোক্তা ঋণ
মধ্যম উদ্যোক্তা ঋণ
বিশেষ উদ্যোক্তা ঋণ

আমরা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক এর তিনটি ঋণ এর কথা উল্লেখ করলাম। আপনাদের মধ্যে যারা মনে করছেন পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক থেকে বিভিন্ন মেয়াদের লোন নিবেন তারা এই তিনটি সেবার মধ্যে যেকোনো একটি সেবা বেছে নিতে পারেন। এখন আমরা আলোচনা করব এই প্রত্যেকটি লোনের আলাদা আলাদা বিস্তারিত। শুধুমাত্র নাম শুনে অনেকে বুঝতে পারবেন এই লোন গুলোর ভেতরে কি কি নিয়ম নীতি রয়েছে এবং লোন গুলো নিতে হলে আপনাকে কি কি শর্ত মানতে হবে।

পল্লীসঞ্চয় উদ্যোক্তা লোন

পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক যেহেতু সবসময় চেষ্টা করে গ্রামীণ অর্থনীতিকে ভালো করতে তাই তারা গ্রামীণ পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোক্তা তৈরিতে লোন প্রদান করে। আপনাদের মাঝে যারা মনে করছেন নিজেকে স্বাবলম্বী করার জন্য উদ্যোক্তা হবেন তারা এই পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক হতে উদ্যোক্তা লোন গ্রহণ করতে পারবেন। উদ্যোক্তা লোন মূলত প্রদান করা হবে যারা বিভিন্ন কৃষি ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য যেমন মৎস্যচাষ, হাঁস-মুরগী পালন, গবাদি পশু পালন, নার্সারি, মৎস্য হ্যাচারি, জৈবসার উৎপাদন, মাশরুম চাষ, বৃক্ষরোপণ ইত্যাদি কাজের জন্য গ্রহণ করবেন।

পল্লীসঞ্চয় লোন নেওয়ার যোগ্যতা

এই ক্ষেত্রে প্রথমত আপনাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। অর্থাৎ যেই ব্যক্তি লোন গ্রহণ করবে সেই ব্যক্তিকে অবশ্যই বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে। পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক কর্তৃক নিবন্ধিত সমিতি এবং সমিতির কোন একটি সদস্য আপনাকে হতে হবে। অবশ্যই পূর্ব থেকে আপনাকে এই ব্যাংকের একটি সদস্য হতে হবে।

সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা মুক্ত কোন ব্যক্তি হতে হবে অথবা আপনি যদি শিক্ষাবৃত্তি গ্রহণকারী কোন ছাত্র-ছাত্রী হন তা হলেও চলবে। সমিতির সদস্যদের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন বয়স হবে 18 বছর এবং সর্বোচ্চ বয়স হবে 55 বছর।

পূর্ব থেকে যে কোন প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে কোন ধরনের ঋণ খেলাপি থাকলে সেটা গ্রহণযোগ্যতা পাবে না।

লোন নেওয়ার ফিচারস

যারা লোন নিবেন বলে ভাবছেন তারা উদ্যোক্তা লোন এর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ 50 হাজার টাকা লোন নিতে পারবেন।

প্রথম দফায় বিতরনের ঋণের পরিমাণ হবে সর্বোচ্চ 10 হাজার টাকা।

তবে বিতরনের পড়বে তার বিনিয়োগের ক্ষেত্র বিশেষ বিবেচনায় রাখতে হবে।

ঋণ পরিশোধের রেকর্ড যদি ভাল হয় তাহলে প্রতি দফায় 10000 টাকা করে ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি করা হবে। তবে এই ক্ষেত্রে আপনি কি খাতে ঋণ ব্যবহার করছেন সেই বিষয়টি বিবেচনায় আনতে হবে।

ঋণ গ্রহণের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

এই ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে আপনার প্রয়োজন পড়বে ঋণগ্রহীতার কর্তৃক স্বাক্ষরিত ডিপি নোট।

সমিতির সভাপতি ও ম্যানেজার কর্তিক সুপারিশ এবং জামিনদার এর স্বাক্ষর।

যিনি মাঠসহকারী রয়েছেন তার সুপারিশ থাকতে হবে।

ঋণ বিতরণের সময় 8 পার্সেন্ট হারে সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ করা হবে।

পল্লীসঞ্চয় মধ্যম উদ্যোক্তা লোন

পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক মাধ্যম উদ্যোক্তা লোন নামে আরও একটি লোন প্রদান করে। যারা এই লোন নেওয়ার আওতায় পড়বেন তারা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক থেকে এই লোন গ্রহণ করতে পারবেন। আপনি কিভাবে বুঝবেন পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের মধ্যম উদ্যোক্তা লোন এর আওতায় আপনি পড়েছেন। এটি বুঝতে হলে আপনাকে আমাদের নিচের অংশটুকু ভালোভাবে লক্ষ্য করতে হবে।

এই ঋণ এর ফিচারসমূহ

পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক থেকে এই লোন যিনি গ্রহণ করবেন তিনি সর্বনিম্ন 50 হাজার 1 টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ 3 লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন নিতে পারবেন।
লোন নেওয়ার জন্য আপনি যেই প্রকল্পের কথা উল্লেখ করবেন সেই প্রকল্পের বয়স ন্যূনতম পাঁচ বছরের হতে হবে।
বিগত সময়ে কমপক্ষে চার বার ঋণ গ্রহণ করে প্রতিবার যে পরিচালনা করেছেন এই ব্যাপারে আপনাকে সকল তথ্য প্রদান করতে হবে।

ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

ঋণগ্রহীতা কর্তৃক স্বাক্ষরিত ডিপি নোট।
প্রকল্প প্রতিষ্ঠানের সকল অস্থাবর সম্পত্তি ও মালামাল ব্যাংকের নিকট হাইপোথিকেশন রাখার জন্য ঋণ গ্রহীতা কর্তৃক স্বাক্ষরিত হয় হাইপোথিকেশন।
এই খেতে আপনার প্রয়োজন পড়বে একজন উপযুক্ত গ্যারান্টার।
সমিতির সভাপতি ও সহকারি সুপারভাইজার এর মন্তব্য আপনার এই ক্ষেত্রে প্রয়োজন পড়বে।
ঋণ বিতরণের সময় 8 পার্সেন্ট হারে সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ করে ঋণ প্রদান করা হবে।

পল্লিসঞ্চায় বিশেষ উদ্যোক্তা লোন

পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক বিশেষ একটি উদ্যোক্তা লোন প্রদান করছে। এই উদ্যোক্তা লোন এর মাধ্যমে একজন ভালো মানের উদ্যোক্তা বিভিন্ন মেয়াদে লোন গ্রহণ করতে পারবেন। মূলত যারা পূর্বের রেকর্ড ভালো রেখে নিজেকে উদ্যোক্তা প্রমাণ করেছে এবং পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক হতে ঋণ গ্রহণ করে তার সদ্ব্যবহার করতে পেরেছে তাদের জন্যই পুনরায় এই লোন প্রদান করা হবে। তো চলুন এখন আপনি জেনে নিন আপনি কিভাবে এই লোন নেওয়ার উপযুক্ত হবেন।

লোন নেওয়ার ফিচারস
ব্যাংক গ্রাহক চাইলে সর্বনিম্ন 3 লক্ষ 1 টাকা থেকে সর্বোচ্চ 10 লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন নিতে পারবেন।
আপনাকে পূর্বের সকল ধরনের নিয়ম মেনে এবং সকল লেনদেন এর শর্ত মেনে পূর্ব থেকে সমিতির সদস্য হতে হবে।

ঋণ নেওয়ার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

ঋণগ্রহীতা কর্তৃক স্বাক্ষরিত ডিপি নোট।
প্রকল্প প্রতিষ্ঠানের সকল অস্থাবর সম্পত্তি ও মালামাল ব্যাংকের নিকট হাইপোথিকেশন রাখার জন্য ঋণ গ্রহীতা কর্তৃক স্বাক্ষরিত হাইপোথিকেশন।
ঋণগ্রহীতার গ্যারান্টার সম্পত্তির দলিল দস্তাবেজ ব্যাংকে জমা রাখতে হবে।
সভায় সিদ্ধান্ত সমিতির সভাপতি ম্যানেজার এবং সংশ্লিষ্ট ফিল্ড সুপারভাইজার এর সুপারিশ প্রয়োজন পড়বে।

এই ছিল আমাদের কাছে আজকের মতো পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক এর লোন সংক্রান্ত সকল তথ্য। আপনারা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক হতে কি ধরনের লোন গ্রহণ করবেন সে বিষয়ে আপনারা অবশ্যই এখন বুঝতে পেরেছেন। তাই আপনি আপনার যোগ্যতা অনুযায়ী পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক থেকে বিভিন্ন মেয়াদে লোন গ্রহণ করুন এবং নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *